Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

✅ নিরাপদ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ ইউনিয়ন আমাদের অঙ্গীকার ✅ জনগণের ভোটে, জনগণের সেবা ✅ নিয়মিত ইউপি হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করুন, স্মার্ট সেবা গ্রহণ করুন ✅ জন্ম নিবন্ধন সবার জন্য জরুরি, এটি নাগরিক অধিকার ও পরিচয়ের গ্যারান্টি ✅ নাগরিক অধিকার করতে সুরক্ষণ ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ✅ সঠিক সময়ে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করে শিশু অধিকার নিশ্চিতকরণে সহায়তা করুন ✅ জনাব মোঃ আরিফান হাসান চৌধুরী, চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) ও গৌতম বিশ্বাস, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সহকারী নিবন্ধক)।


খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির

 

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি: জনগণের খাদ্য নিরাপত্তায় একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ

বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি অগ্রাধিকারমূলক বিষয়। দেশের দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সরকার পরিচালিত "খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি" এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই কর্মসূচি দরিদ্র মানুষের জন্য স্বল্প মূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।


কর্মসূচির সূচনা ও প্রেক্ষাপট

"খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি" চালু করা হয় ২০১৬ সালে। কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশের দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং মৌসুমভিত্তিক খাদ্য সংকট মোকাবিলা করা। বিশেষ করে বোরো ও আমন মৌসুমের মাঝামাঝি সময়, যখন খাদ্যের চাহিদা বাড়ে, তখন এই কর্মসূচি অত্যন্ত কার্যকর হয়ে ওঠে।


কর্মসূচির মূল বৈশিষ্ট্য

  • সুবিধাভোগীরা প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল মাত্র ১৫ টাকায় ক্রয় করতে পারেন।

  • কর্মসূচির সময়কাল: সাধারণত সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও মার্চ, এপ্রিল মাসে চালু থাকে, তবে প্রয়োজনে সময়সীমা বাড়ানো হয়।

  • তালিকাভুক্ত দরিদ্র পরিবারগুলোর মধ্যে চাল বিতরণ করা হয়।

  • সুবিধাভোগী তালিকা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে নির্ধারণ করা হয়।


সুবিধাভোগী নির্ধারণের মানদণ্ড

  • মাসিক আয় নির্দিষ্ট সীমার নিচে থাকা পরিবার।

  • বিধবা, স্বামী-পরিত্যক্তা নারী এবং বিশেষভাবে অক্ষম ব্যক্তি অগ্রাধিকার পায়।

  • ভূমিহীন, দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক এবং শহরের বস্তিবাসীরা অন্তর্ভুক্ত হয়।


কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া

  • খাদ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে কর্মসূচি পরিচালিত হয়।

  • ইউনিয়ন পর্যায়ে ডিলারের মাধ্যমে চাল বিতরণ করা হয়।

  • প্রত্যেক সুবিধাভোগীর নামে ডিজিটাল কার্ড (ফুড কার্ড) ইস্যু করা হয়, যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

  • স্থানীয় প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং ও তদারকি করে, যাতে অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করা যায়।


কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব

  • দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।

  • মৌসুমভিত্তিক খাদ্য সংকটের সময় দরিদ্ররা সহজেই খাদ্য সংগ্রহ করতে পারছে।

  • চালের বাজারে অতিরিক্ত চাপ কমানো সম্ভব হয়েছে।

  • কৃষি উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থায় ভারসাম্য রক্ষা হয়েছে।

  • দুর্যোগকালে (যেমন বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়) বিশেষ সহায়তা হিসাবে ভূমিকা রেখেছে।


চ্যালেঞ্জসমূহ

  • সুবিধাভোগী তালিকা প্রস্তুতে কখনো কখনো পক্ষপাতিত্ব বা অনিয়ম দেখা যায়।

  • ডিলারদের মাধ্যমে চাল বিতরণে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অভিযোগ পাওয়া যায়।

  • সময়মতো চাল সরবরাহ না হলে সমস্যা তৈরি হয়।

  • প্রকৃত দরিদ্রদের বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, যদি তালিকা হালনাগাদ না করা হয়।


উন্নয়নের সুযোগ

  • সুবিধাভোগীদের তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ করা উচিত।

  • অনলাইনে সুবিধাভোগী যাচাইয়ের ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা দরকার।

  • দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম জোরদার করা প্রয়োজন।

  • কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধি করে শহরের বস্তিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকেও আরও ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

  • ডিলারদের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।


উপসংহার

"খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি" বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এটি শুধু দরিদ্র মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটাচ্ছে না, বরং দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। যথাযথ বাস্তবায়ন ও তদারকির মাধ্যমে এই কর্মসূচির সুফল আরও বিস্তৃত করা সম্ভব হবে।