Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

✅ নিরাপদ, সুন্দর ও সমৃদ্ধ ইউনিয়ন আমাদের অঙ্গীকার ✅ জনগণের ভোটে, জনগণের সেবা ✅ নিয়মিত ইউপি হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করুন, স্মার্ট সেবা গ্রহণ করুন ✅ জন্ম নিবন্ধন সবার জন্য জরুরি, এটি নাগরিক অধিকার ও পরিচয়ের গ্যারান্টি ✅ নাগরিক অধিকার করতে সুরক্ষণ ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ✅ সঠিক সময়ে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করে শিশু অধিকার নিশ্চিতকরণে সহায়তা করুন ✅ জনাব মোঃ আরিফান হাসান চৌধুরী, চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) ও গৌতম বিশ্বাস, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সহকারী নিবন্ধক)।


উদ্যোক্তার প্রোফাইল

১নং এস.বি.কে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার

মহেশপুর, ঝিনাইদহ।

sbkup.jhenaidah.gov.bd


মোঃ রাশিদুল ইসলাম 
উদ্যোক্তা 
একসেবা আইডি নং-৬০০০০০০০৭৮০১

মোছাঃ রেখা খাতুন
উদ্যোক্তা 
একসেবা আইডি নং-৯৯৬০০০০০০০২৭২২



ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তা: ডিজিটাল বাংলাদেশের তৃণমূলের নায়ক-নায়িকা

বাংলাদেশে প্রযুক্তিনির্ভর প্রশাসন, সেবা ও তথ্যব্যবস্থা গঠনের অন্যতম যুগান্তকারী পদক্ষেপ ছিল “ডিজিটাল বাংলাদেশ” ভিশনের অংশ হিসেবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (UDC) এর প্রতিষ্ঠা। ২০১০ সালে প্রতিটি ইউনিয়নে অন্তত একজন নারী ও একজন পুরুষ উদ্যোক্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই সেবা কেন্দ্রগুলো। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল তৃণমূল জনগণের দোরগোড়ায় সরকারি-বেসরকারি সেবা সহজলভ্য করে তোলা। সময়ের পরিক্রমায় এই নারী-পুরুষ উদ্যোক্তারা হয়ে উঠেছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তব রূপকার।


🎯 UDC-এর ভূমিকা ও উদ্দেশ্য

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (UDC) হচ্ছে গ্রামীণ জনগণের নিকটতম সরকারি সেবা কেন্দ্র, যেখানে ই-গভর্নেন্স, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নাগরিক সেবা, অনলাইন আবেদনসহ নানা ধরণের তথ্য ও সেবা পাওয়া যায়। এই সেন্টারগুলো পরিচালনা করেন দুইজন উদ্যোক্তা – একজন নারী এবং একজন পুরুষ

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে জনগণের মাঝে প্রযুক্তি ব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে।


👩‍💻 নারী উদ্যোক্তা: প্রযুক্তির সঙ্গে নারীর পদচারণা

UDC-এর নারী উদ্যোক্তারা কেবল সেবা প্রদানকারী নন, তারা সমাজে নারীর ক্ষমতায়ন, আত্মনির্ভরতা ও নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন। অধিকাংশ নারী উদ্যোক্তাই এসেছে গ্রামীণ ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে। প্রযুক্তি ও তথ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে তারা নিজের জীবনের গতিপথ বদলে দিয়েছেন এবং অন্য নারীদের জন্য পথ দেখিয়েছেন।

✔ নারী উদ্যোক্তাদের অবদান:

নারীদের মাঝে প্রযুক্তি ব্যবহারের আগ্রহ সৃষ্টি

অনলাইন শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি

কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ে স্থানীয় মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া

নারীদের জন্য নিরাপদ সেবা নিশ্চিত করা

বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, মাতৃত্বকালীন সেবা সম্পর্কে তথ্য ও সহায়তা প্রদান

নারী উদ্যোক্তারা নিজেদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন এবং সমাজে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। অনেকেই আজ একজন সফল উদ্যোক্তা, প্রশিক্ষক বা স্থানীয় নেত্রী হিসেবে পরিচিত।


👨‍💻 পুরুষ উদ্যোক্তা: নেতৃত্ব, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে অগ্রণী ভূমিকা

UDC-এর পুরুষ উদ্যোক্তারাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। প্রযুক্তি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং ক্ষেত্রভিত্তিক সেবা পরিচালনায় তারা দক্ষতা ও উদ্ভাবনী চিন্তার পরিচয় দিচ্ছেন।

✔ পুরুষ উদ্যোক্তাদের অবদান:

অনলাইন সেবা যেমন জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, পাসপোর্ট আবেদন ইত্যাদি পরিচালনা

ইউনিয়ন পরিষদ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে সেবা প্রদান

প্রযুক্তিগত সমস্যা সমাধান ও পরামর্শ প্রদান

স্থানীয় যুবসমাজকে ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইন আয়ের পথ দেখানো

স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল প্রশিক্ষণ আয়োজন

পুরুষ উদ্যোক্তারা শুধু সেবা প্রদানেই সীমাবদ্ধ থাকেন না, বরং অনেকেই নিজ উদ্যোগে ডিজিটাল উদ্ভাবন, ই-কমার্স কিংবা আইটি ট্রেনিং সেন্টার গড়ে তুলেছেন।


🤝 নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তার সম্মিলিত ভূমিকা

UDC-এর নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তারা একটি টিম হিসেবে কাজ করেন। একজন আরেকজনের সহায়ক, পরিপূরক ও শক্তি হয়ে ওঠেন। উদাহরণস্বরূপ, নারীরা যখন নারী গ্রাহকদের সঙ্গে কাজ করেন, তখন পুরুষ উদ্যোক্তারা প্রযুক্তি-ভিত্তিক কাজ বা সরকারিভাবে সংযুক্ত থাকেন। আবার প্রয়োজন হলে ভূমিকা অদলবদল করে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।

এই সম্মিলিত কাজের ফলে—

গ্রামীণ জনগণের আস্থা বেড়েছে

সেবা গ্রহণে নারী-পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে

দক্ষতা ও সেবার গুণগত মান বেড়েছে

কর্মপরিবেশ হয়েছে আরও মানবিক ও কার্যকর


💬 চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দুই উদ্যোক্তা

যদিও তাদের ভূমিকা প্রশংসনীয়, কিন্তু চ্যালেঞ্জও কম নয়। নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে রয়েছে সামাজিক কুসংস্কার, পারিবারিক বাধা, নিরাপত্তাজনিত সমস্যা এবং প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা। অন্যদিকে পুরুষ উদ্যোক্তারা সরকারি দপ্তরের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, অবকাঠামোগত সমস্যা ও অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্যের মুখোমুখি হন।

দুইজনই প্রায়শই সেবা প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, দ্রুত ইন্টারনেট, আধুনিক যন্ত্রপাতি কিংবা নির্ধারিত সম্মানী পান না। অনেক সময় জনগণের সঠিক মূল্যায়ন না পাওয়া, অজ্ঞতা কিংবা বিরূপ মনোভাবকেও মোকাবিলা করতে হয়।


🚀 সফলতার গল্প: অনুপ্রেরণার উৎস

বাংলাদেশে অনেক নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তার সাফল্যের গল্প এখন অনুপ্রেরণার অংশ। যেমন, কোন এক নারী উদ্যোক্তা যিনি একসময় ঘরবন্দি ছিলেন, আজ তিনি ১০০০+ নারীর কম্পিউটার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। অথবা একজন পুরুষ উদ্যোক্তা যিনি ডিজিটাল মার্কেটিং শেখানোর মাধ্যমে স্থানীয় তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং-এ যুক্ত করেছেন।

এই উদ্যোক্তারা শুধু নিজেদের জন্যই কাজ করছেন না, বরং একটি স্বপ্নের সমাজ গড়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন।


🏁 উপসংহার: তৃণমূলে প্রযুক্তির আলোকবর্তিকা

ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তারা বাংলাদেশের ডিজিটাল যাত্রার তৃণমূলের নায়ক-নায়িকা। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ গ্রামের সাধারণ মানুষও পাচ্ছেন নাগরিক সেবা, প্রযুক্তির শিক্ষা ও ডিজিটাল সুবিধা।

তাদের কাজের স্বীকৃতি, ন্যায্য সম্মানী, প্রশিক্ষণ ও সহায়তা নিশ্চিত করা গেলে – তারা দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আরও বড় অবদান রাখতে পারবেন।

তারা শুধুই উদ্যোক্তা নন – তারা তৃণমূল পরিবর্তনের পথপ্রদর্শক।


📊 ইনফোগ্রাফিক: UDC নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তাদের কার্যক্রম এক নজরে

কার্যক্রম / অবদান
নারী উদ্যোক্তা 👩‍💻
পুরুষ উদ্যোক্তা 👨‍💻
নাগরিক সেবা প্রদান (জন্মনিবন্ধন, সনদ)
✅ অংশগ্রহণ
✅ নেতৃত্ব
প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ
✅ মেয়েদের জন্য বিশেষ
✅ প্রযুক্তিগত সহায়তা
কমিউনিটি সচেতনতা কার্যক্রম
✅ নারীদের মধ্যে বেশি
✅ যৌথ অংশগ্রহণ
বাল্যবিবাহ রোধ ও নারী সুরক্ষা
✅ নেতৃত্ব
✅ সহায়তা
ফ্রিল্যান্সিং/ই-কমার্স সচেতনতা
✅ নারীদের উৎসাহ
✅ প্রশিক্ষণ প্রদান
সরকারি দপ্তরের যোগাযোগ ও কাজ
✅ সহযোগী ভূমিকা
✅ নেতৃত্ব
স্থানীয় সমস্যা সমাধানে ভূমিকা
✅ পরিবার ও নারী ইস্যু
✅ সমন্বয় ও নেতৃত্ব

🎤 সাক্ষাৎকারভিত্তিক অংশ: দুই উদ্যোক্তার কণ্ঠে ডিজিটাল পরিবর্তনের গল্প

👩‍💻 মোছাঃ রেখা খাতুন– নারী উদ্যোক্তা, এস.বি.কে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, মহেশপুর, ঝিনাইদহ।

প্রশ্ন: উদ্যোক্তা হওয়ার পথে আপনার প্রধান চ্যালেঞ্জ কী ছিল?
উত্তর: পরিবার প্রথমে একটু ভয় পেত, মেয়েরা কীভাবে কম্পিউটার চালাবে, দিনে পর দিন অফিসে বসে থাকবে! কিন্তু আমি ধীরে ধীরে প্রমাণ করেছি মেয়েরাও প্রযুক্তিতে দক্ষ হতে পারে।

প্রশ্ন: আজ আপনি কী কী পরিবর্তন এনেছেন?
উত্তর: এখন অনেক নারী আমার কাছে এসে অনলাইন আবেদন, জন্মসনদ বা স্কলারশিপ ফর্ম পূরণ করান। আমি স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের জন্য কম্পিউটার শেখানোর উদ্যোগও নিয়েছি।


👨‍💻 মোঃ রাশিদুল ইসলাম – পুরুষ উদ্যোক্তা, এস.বি.কে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার, মহেশপুর, ঝিনাইদহ।

প্রশ্ন: UDC চালাতে সবচেয়ে কঠিন কোন বিষয়টি মনে হয়েছে?
উত্তর: প্রযুক্তি আর সরকারি কাগজপত্রের সমন্বয় করাটা শুরুতে কঠিন ছিল। কিন্তু নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ইউপি চেয়ারম্যানদের সহযোগিতায় এখন সব কিছু অনেক সহজ।

প্রশ্ন: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
উত্তর: আমি চাই আমাদের UDC থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখানোর একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হোক, যেন তরুণেরা ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারে।


শেষকথা:

এই দুইজন উদ্যোক্তার কণ্ঠেই উঠে এসেছে প্রতিকূলতা, সংগ্রাম এবং সাফল্যের কথা। তারা আমাদের দেখিয়েছেন — প্রযুক্তি, উদ্যোগ এবং জনসেবার একসাথে চলার নামই UDC। নারী-পুরুষ যখন একসাথে একটি সমাজে কাজ করেন, তখন সে সমাজ শুধু ডিজিটাল নয়, মানবিকভাবেও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।