Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

**নিয়মিত ইউপি হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করুন, স্মার্ট সেবা গ্রহণ করুন ** **নাগরিক অধিকার করতে সুরক্ষণ ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন** **সঠিক সময়ে শিশুর জন্ম নিবন্ধন করে শিশু অধিকার নিশ্চিতকরণে সহায়তা করুন** জনাব মোঃ আরিফান হাসান চৌধুরী, চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) ও মোঃ জহুরুল হক, ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সহকারী নিবন্ধক)। ***সর্বজনীন পেনশন সম্পর্কে জানতে ও রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করুন www.upension.gov.bd


শিরোনাম
খালিশপুর নীলকুঠি ও আমবাগান (নীল চাষ ও নীল বিদ্রোহ)
স্থান

খালিশপুর বাজার, মহেশপুর, ঝিনাইদহ।

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাকা হতে রয়েল, জে আর, পূর্বশা, জে লাইন, দর্শনা ডিলাক্স, সোনার তরী, কোহিনুর, সোনালী, চিত্রা, কালিগঞ্জ এক্সেপ্রেস, মামুন, সোহেলী পরিবহন ও মাইক্রোবাসের মাধ্যমে খালিশপুরে আসা যায়।

 

ঝিনাইদহ জেলা হতে বাস, মটরসাইকেল, মাইক্রোবাসের মাধ্যমে খালিশপুরে আসা যায়।

বিস্তারিত

খালিশপুর নীলকুঠি ও আমবাগান (নীল চাষ ও নীল বিদ্রোহ)

The Nulkuthi and Mango Orchard of Khalishpur (Indigo Cultivation and Indigo Revolt)


খালিশপুর নীলকুঠি ভবন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। ইংরেজ আমলে নির্মিত এ নীলকুঠিটি ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার হাট খালিশপুর নামক গ্রামে অবস্থিত।

ইতিহাস থেকে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৮১১ সালে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর দুতিয়ার কাঠি কুঠির মালিক মি. ব্রিজেবেন মহেশপুরের খালিশপুর কপোতাক্ষ নদীর তীরে কুঠিটি স্থাপন করেন। সে সময় খালিশপুর থেকে সাগরদাঁড়ি হয়ে কলকাতা পর্যন্ত লঞ্চ, স্টিমার চলাচল করত।

তৎকালীন খালিশপুরের কুঠি কাচারী হিসেবে ব্যবহার হতো। কলকাতা থেকে অনেক কুঠিয়াল সাহেব নদী পথে কাচারী বাড়িতে আসতেন। এক সময় বৃহত্তম যশোর জেলায় অনেক ইংরেজ নীল ব্যবসায়ীর আগমন ঘটে। কারণ বৃহত্তম যশোর-ঝিনাইদহ জেলার মাটি নীল চাষের জন্য উপযোগী ছিল।

এই অঞ্চলের এনায়েতপুর, নগরবাথান, মধুপুর, ঝিনাইদহ, হাজরাতলা, কলোমনখালী, কালীগঞ্জ, শৈলকুপার বিজুলিয়া, হরিণাকুন্ড, জোড়াদাহ, ধুলিয়া, কোটচাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে ইংরেজরা নীল চাষ শুরু করে। আর এ এলাকার সাওতাল সম্প্রদায়সহ অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন ছিল নীল চাষের শ্রমিক। সেই সময় ইংরেজরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নীলকুঠি স্থাপন করে। একাধিক নীল কুঠি নিয়ন্ত্রিত হতো কনসার্ন অফিস দ্বারা। সে সময় কাঠগড়া কনসার্ন অফিসের অধীন ছিল খালিশপুর নীলকুঠি।

নীল চাষে ইংরেজ নীলকর সাহেবদের মধ্যে যাদের নাম জানা যায় তাদের মধ্যে মধুপুরের নীল কুঠির কুঠিয়াল টিসিটুইডি, কোটচাঁদপুরের নীল কুঠিয়াল সিনোলব ম্যাকলিউড, ডাম্বল, ব্রিজবেন, নিউ হাউস সাহেব উলেখযোগ্য। নীলকর সাহেবরা মাঠে নীল চাষ দেখতে বেশিরভাগ সময় ঘোড়ায় চড়ে এলাকায় যাতায়াত করতেন। কষ্টকর ও নির্যাতনমূলক নীল চাষ করতে এলাকার কৃষকরা এক পর্যায়ে অনাগ্রহ প্রদর্শন শুরু করেন।

১৮১০ থেকে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত এই নীলকুঠিটি নীলচাষের জন্য ব্যবহার করা হতো। ১৮৬০ সালের দিকে এ অঞ্চলে নীল চাষের বিরুদ্ধে নির্যাতিত কৃষকরা বিদ্রোহ করেন। লঞ্চযোগে ভ্রমণের সময় হাজার হাজার কৃষক ইংরেজ ছোট লাট গ্রান্ট সাহেবকে কুমার ও কালী নদীতে ঘেরাও করেন এবং নীল চাষ বন্ধের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। সরকার ১৮৬০ সালেই নীল কমিশন গঠন করতে বাধ্য হয়। কিন্তু কয়েক বছর যেতে না যেতেই নীলকর সাহেবরা এই নীলের চাষ আবার শুরু করেন। বিক্ষুব্ধ কৃষকরা যখন বিদ্রোহ করতে শুরু করলো তখন এদের অত্যাচার কিছুটা কমলো। অন্যান্য নীলকুঠি ইংরেজরা জমিদারদের মধ্যে বিক্রি করে দিয়ে যায়; কিন্তু মহেশপুরের খালিশপুর নীলকুঠিটি কোনো ইংরেজ বিক্রি করে দিয়ে যেতে পারেনি। তারা কৃষকদের বিদ্রোহের পর এটি ফেলে পালিয়ে যায়। যার কারণে এই জমিগুলো এখন সরকারি খাস খতিয়ানে আছে । পরবর্তীতে জমিদাররা এটি তাদের কাছারি হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির সময় তৎকালীন নীলকুঠির মালিক জমিদারও জায়গাটি ছেড়ে চলে যান। এরপর থেকে এটি মূলত পরিত্যক্ত।

বর্তমানে নীলকুঠি ভবন ও এর সংলগ্ন জমিটি বাংলাদেশ সরকারের অধীনে রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা হিসেবে নথিভুক্ত করে। দক্ষিণমুখী কুঠির ভবনের দৈর্ঘ্য ১২০ ফুট, প্রস্থ ৪০ ফুট ও উচ্চতা ৩০ ফুট। দক্ষিণ দিকে প্রশস্ত বারান্দা। এটি ১২ টি কক্ষ বিশিষ্ট দ্বিতল ভবন। দেয়াল ২০ ইঞ্চি পুরু। নিচের তলা থেকে উপরের তলার কক্ষগুলো আয়তনে বড়। চুন, শুড়কি ও পাকা ইটের তৈরি। গোসল করার জন্য পাকা সিঁড়ি কপোতাক্ষ নদীর তীর পর্যন্ত নামানো। নীলকুটিতে রয়েছে একটি আমবাগান। নীলকুটি ও আমবাগান মিলিয়ে সংলগ্ন এ জায়গাটি ১১.২৪০০ একর জমির উপর অবস্থিত। বর্তমানে নীলকুঠির পাশেই স্থাপিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মহাবিদ্যালয় ও বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর।