বাড়ছে সেবার বহর, গ্রাম হবে শহর
১নং এস.বি.কে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার
মহেশপুর, ঝিনাইদহ।
সেবা সমূহ
ডিজিটাল সেন্টার থেকে তিন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়।
*অনলাইন সেবা *অফলাইন সেবা *ব্যাংকিং সেবা
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার সেবা: বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের ডিজিটাল বিপ্লব
বাংলাদেশে তথ্য প্রযুক্তির বিস্তার ও ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (UDC)। এটি গ্রামীণ জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা ডিজিটাল সেবা সহজলভ্য করতে সাহায্য করছে। গ্রামাঞ্চলে যেখানে আগে টেলিফোন বা ইন্টারনেট সেবা পাওয়া ছিলো কঠিন, সেখানে এখন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার সেবা প্রদান করছে প্রতিদিনের নানা সেবা, যা নাগরিক জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসছে।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার হল একটি সেবা কেন্দ্র, যা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে জনগণের জন্য নানা সরকারি ও বেসরকারি সেবা প্রদান করা হয়। এই সেন্টারগুলোতে কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সুবিধার মাধ্যমে নাগরিকরা বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা উপভোগ করতে পারেন।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল সেবা প্রদান করা হয়। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেবা হলো:
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নিবন্ধন ও সংশোধন: ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোর মাধ্যমে নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য নিবন্ধন করতে পারেন অথবা পুরনো পরিচয়পত্র সংশোধন করতে পারেন।
পাসপোর্ট সেবা: যেসব নাগরিক বিদেশে যেতে চান, তাদের পাসপোর্ট সংক্রান্ত সেবাগুলি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে সহজেই নিতে পারেন।
গাড়ি রেজিস্ট্রেশন এবং লাইসেন্স: গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদনও এই সেন্টার থেকে করা সম্ভব।
কৃষি সহায়তা: কৃষকদের জন্য কৃষি উপকরণ, সার, বীজ, কৃষি ঋণ এবং অন্যান্য সহায়তা পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি কৃষকরা কৃষি বিষয়ক পরামর্শও নিতে পারেন।
মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস: মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেমন বিকাশ, রকেট, নগদ ইত্যাদির মাধ্যমে লেনদেন করার সুবিধাও সেন্টারগুলোতে রয়েছে।
ই-গভর্নমেন্ট সেবা: বিভিন্ন সরকারি সেবা, যেমন ভূমি সংক্রান্ত সেবা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রম, এসব ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে বিভিন্ন প্রকার শিক্ষামূলক কোর্স এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়, যা স্থানীয় জনগণের দক্ষতা উন্নয়নে সাহায্য করে।
সহজলভ্যতা: ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে যেকোনো ব্যক্তির জন্য ডিজিটাল সেবা পাওয়া সহজ হয়েছে। বিশেষ করে, যারা শহরের বাইরে বসবাস করেন, তারা এই সেন্টারের মাধ্যমে নিজেদের প্রয়োজনীয় সেবা সহজে পেতে পারেন।
সময়ের সাশ্রয়: আগে শহরের মধ্যে গিয়ে সেবা গ্রহণ করতে হতো, যা অনেক সময়সাপেক্ষ ছিল। এখন ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়েই নানা কাজ করা সম্ভব।
খরচ কমানো: শহরের বিভিন্ন সেবা কেন্দ্রের তুলনায় ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারগুলোতে সেবা গ্রহণের খরচ অনেক কম। এর ফলে গ্রামের মানুষও কম খরচে আধুনিক সেবা উপভোগ করতে পারছেন।
শিক্ষাগত উন্নয়ন: এসব সেন্টারে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ থাকায় গ্রামাঞ্চলের মানুষদের ডিজিটাল শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এটা তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সাহায্য করে।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার সেবা ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত এবং উন্নত হতে পারে। সরকার ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এসব সেন্টারে আরও বেশি সেবা সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল ডিভাইড কমানো এবং গ্রামীণ জনগণের মধ্যে ডিজিটাল সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হবে।
ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগণের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে জনগণ যেমন সরকারি সেবা সহজভাবে পাচ্ছে, তেমনি তারা প্রযুক্তির প্রতি তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকারের এই উদ্যোগ গ্রামাঞ্চলের উন্নয়ন এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এক পদক্ষেপ এগিয়ে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস