Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

**Pay Regular UP Holding Tax, Receive Smart Services** **Safety to Citizen Rights Registration of Birth and Death within 45 Days** **Help Ensure Child Rights by Registering Child Birth on Time** Mr. Md. Arifan Hasan Chowdhury , Chairman (Registrar) and Goutam Biswas, UP Administrative Officer (Assistant Registrar). ***To know about Universal Pension and to register visit www.upension.gov.bd


Image
Title
Fishermen and fish farming:
Details

এসবিকে ইউনিয়নে জেলে ও মাছ চাষ: জীবিকা ও অর্থনীতির চালিকাশক্তি

এসবিকে ইউনিয়ন, যার বুক জুড়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোট-বড় খাল-বিল, নদী ও জলাশয়—প্রকৃতি যেন আপন করেই নিয়েছে এই অঞ্চলকে। এখানকার মানুষ বহুদিন ধরেই পানির সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। বিশেষ করে স্থানীয় জেলে সম্প্রদায় এবং মাছ চাষিরা এসবিকে ইউনিয়নের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখানকার মাছ চাষ পদ্ধতি, প্রযুক্তি এবং বাজার ব্যবস্থা পরিবর্তন হয়েছে। আজ এসবিকে ইউনিয়ন মাছ উৎপাদনের একটি সম্ভাবনাময় কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


জেলে সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও জীবনধারা

এসবিকে ইউনিয়নে বসবাসকারী জেলে পরিবারগুলো বহু প্রজন্ম ধরে নদী, খাল এবং বিলনির্ভর জীবিকা অনুসরণ করছেন। সাধারণত:

তারা বর্ষাকালে দেশীয় মাছ আহরণ করেন (রুই, কাতলা, শিং, মাগুর, টেংরা ইত্যাদি)

শুকনো মৌসুমে অনেকে মাছ চাষে যুক্ত হন অথবা অন্য পেশায় যুক্ত হতে বাধ্য হন

প্রথাগত মাছ ধরার পদ্ধতি যেমন—জাল, বড়শি, চাপলি, খৈল ব্যবহার এখনও দেখা যায়

নারী জেলেরা শুকনো মাছ তৈরি ও বিক্রিতে যুক্ত হন

তবে আধুনিকায়নের অভাব, মৌসুমভিত্তিক আয়, ও জলাশয়ের দখল বা দূষণ জেলেদের জীবনকে অনিশ্চিত করে তুলছে।


মাছ চাষের বিস্তার ও প্রকারভেদ

এসবিকে ইউনিয়নে বর্তমানে ৩ ধরনের মাছ চাষ দেখা যায়:


নিম্নভূমির প্রাকৃতিক ঘের বা পুকুরে চাষ

অবদ্ধ জলাশয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে পুকুর ও হ্যাচারিতে মাছ চাষ

ধানের জমিতে ধান ও মাছ একসাথে চাষ (ইন্টিগ্রেটেড ফার্মিং)


চাষযোগ্য মাছের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

রুই জাতীয় মাছ (রুই, কাতলা, মৃগেল)

তেলাপিয়া ও পাঙাস

দেশীয় জাতের শিং, মাগুর, কৈ

গলদা ও চিংড়ি (কিছু স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে)

প্রতি বিঘায় বছরে গড়ে ৭০০-১০০০ কেজি মাছ উৎপাদন সম্ভব, যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরেও পাঠানো হচ্ছে।


অর্থনৈতিক প্রভাব ও কর্মসংস্থান

মাছ চাষ ও জেলেদের কার্যক্রম থেকে এসবিকে ইউনিয়নে:

প্রায় ৩০০-৫০০ পরিবার সরাসরি জীবিকা নির্বাহ করছেন

মাছ ধরার মৌসুমে অস্থায়ীভাবে অতিরিক্ত শ্রমিকদের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়


স্থানীয় বাজার ও হাটে মাছ বিক্রির মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তারাও যুক্ত হচ্ছেন

কিছু পরিবার হ্যাচারি, মাছ খাদ্য বিক্রি ও সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে যুক্ত হয়ে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠছেন

সরকারি সহায়তা ও উন্নয়ন প্রকল্প

এসবিকে ইউনিয়নের জেলেরা এবং মাছচাষিরা নানাবিধ সরকারি উদ্যোগ ও এনজিও প্রকল্প থেকে সহায়তা পাচ্ছেন:

মৎস্য অফিসের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ

মাছের পোনা সরবরাহ ও চাষ পদ্ধতির উন্নয়ন

স্বল্প সুদে কৃষিঋণ ও ভর্তুকি

জেলে পুনর্বাসন ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি (মৌসুমি নিষেধাজ্ঞার সময়)

প্রধান চ্যালেঞ্জসমূহ

প্রাকৃতিক জলাশয়ের দূষণ ও দখল মাছের প্রজনন ও আহরণে বাধা সৃষ্টি করছে

জেলেদের মৌসুমি বেকারত্ব ও আর্থিক অনিশ্চয়তা

বাজার ব্যবস্থার অসংগঠিত অবস্থা ও মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্ম্য

ভালো জাতের পোনার অভাব ও রোগবালাই সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত

মৎস্যজীবীদের সামাজিক নিরাপত্তার অভাব

সম্ভাবনার দিগন্ত


এসবিকে ইউনিয়নে মাছ চাষ এবং জেলে সম্প্রদায়কে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে একটি শক্তিশালী গ্রামীণ ব্লু-ইকোনমি। এজন্য প্রয়োজন:

বিস্তৃত প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ

দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রণোদনা ও সরাসরি বাজার সংযোগ

মৎস্যভিত্তিক কোল্ডস্টোরেজ, প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র ও সরবরাহ চেইন গঠন

জেলে পরিবারদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ


উপসংহার

এসবিকে ইউনিয়নের জেলে ও মাছচাষিরা কেবল পেশাজীবী নন—তারা এই এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি। তাদের টেকসই উন্নয়নের জন্য সুপরিকল্পিত সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও নীতিগত অগ্রাধিকার নিশ্চিত করলে, এসবিকে ইউনিয়ন হয়ে উঠতে পারে মৎস্য উৎপাদনে দেশের একটি মডেল অঞ্চল।