Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

**Pay Regular UP Holding Tax, Receive Smart Services** **Safety to Citizen Rights Registration of Birth and Death within 45 Days** **Help Ensure Child Rights by Registering Child Birth on Time** Mr. Md. Arifan Hasan Chowdhury , Chairman (Registrar) and Goutam Biswas, UP Administrative Officer (Assistant Registrar). ***To know about Universal Pension and to register visit www.upension.gov.bd


Image
Title
Mango orchard cultivation
Details

এসবিকে ইউনিয়নে আম বাগান চাষ: কৃষিনির্ভর উন্নয়নের নতুন সম্ভাবনা

বাংলাদেশে আম একটি জাতীয় ফল হিসেবেই পরিচিত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আম চাষ জনপ্রিয় হলেও বর্তমানে এসবিকে ইউনিয়নে আম বাগান চাষ একটি উদীয়মান খাত হিসেবে গড়ে উঠছে। এখানকার উর্বর মাটি, অনুকূল আবহাওয়া এবং কৃষকদের আগ্রহের কারণে আম চাষ দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখার পাশাপাশি এই খাতটি কর্মসংস্থান ও রপ্তানি সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

আবহাওয়া ও মাটির উপযোগিতা

এসবিকে ইউনিয়নের মাটি সাধারণত দোআঁশ ও বেলে দোআঁশ প্রকৃতির, যা আম গাছের বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত। এখানে:

শুষ্ক ও ঠান্ডা শীত মৌসুম আমের ফুল আসার জন্য সহায়ক

পর্যাপ্ত রোদ ও গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়া আম পাকার জন্য আদর্শ

বর্ষাকালে পর্যাপ্ত পানি থাকলেও অধিক জলাবদ্ধতা নেই—এটি আম চাষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

চাষযোগ্য আমের জাতসমূহ

এসবিকে ইউনিয়নে বর্তমানে কৃষকরা নিম্নোক্ত জাতগুলো চাষ করছেন:

ফজলি: বড় আকৃতির ও সুস্বাদু

ল্যাংড়া: সুগন্ধি ও জনপ্রিয় জাত

গোপালভোগ: আগাম ফলন দেয়

আম্রপালি: ছোট আকৃতির হলেও বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক

হিমসাগর: স্বাদে অনন্য, বাজারে ব্যাপক চাহিদা

অনেক চাষি এখন কলম চারা ব্যবহার করে বাগান গড়ে তুলছেন, যার ফলন ৩ বছরের মধ্যেই শুরু হয়।

আম চাষের পদ্ধতি ও পরিচর্যা

প্রতি একরে গড়ে ৭০-৮০টি গাছ রোপণ করা যায় (৮-১০ ফুট দূরত্বে)

গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি ও জৈব সার প্রয়োগ করা হয়

বসন্তকালে গাছে মুকুল আসে, যা মার্চ-এপ্রিলের দিকে ফল ধারণ করে

জুন থেকে জুলাই মাসে ফল সংগ্রহ করা হয়

রোগবালাই রোধে কৃষকরা এখন বায়ো-কন্ট্রোল পদ্ধতি ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করছেন।

অর্থনৈতিক সুবিধা ও আয় সম্ভাবনা

একটি পরিপক্ব আম গাছ থেকে বছরে গড়ে ৮০-১০০ কেজি আম সংগ্রহ করা যায়। জনপ্রিয় জাতগুলোর বাজারদর প্রতি কেজিতে ৭০-১৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ফলে:

প্রতি একরে বছরে গড়ে আয়: ২-৪ লাখ টাকা (জাত ও পরিচর্যার মান অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)

অনেক কৃষক আম সংরক্ষণ, ঝুড়ি/ক্রেটে প্যাকিং এবং সরাসরি শহরের পাইকারি বাজারে বিক্রির মাধ্যমে অতিরিক্ত লাভ করছেন।

কৃষকদের অভিজ্ঞতা ও সাফল্য

এসবিকে ইউনিয়নের অনেক তরুণ এখন আম বাগানকে আধুনিকভাবে গড়ে তুলছেন। তারা নিচের উদ্যোগ নিচ্ছেন:

ইন্টারক্রপিং: আম গাছের ফাঁকে শাকসবজি চাষ

জৈব সার উৎপাদন: গবাদি পশুর গোবর ব্যবহার করে নিজেরাই সার তৈরি

ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ: আম দিয়ে আচার, জ্যাম, শুকনো আম তৈরি শুরু করেছেন কিছু উদ্যোক্তা

সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে প্রশিক্ষণ, চারা বিতরণ ও রোগব্যবস্থাপনার নির্দেশনা পাওয়া যাচ্ছে

কিছু এনজিও ও ব্যাংক “ফলদ বাগান ঋণ” প্রদান করছে স্বল্প সুদে

ইউনিয়ন পর্যায়ে আম চাষিদের বাগান পরিদর্শন ও ফলোআপ সেবা দেওয়া হচ্ছে

চ্যালেঞ্জসমূহ

বৈরি আবহাওয়া: অকাল ঝড় বা অতিবৃষ্টি ফুল ঝরিয়ে দিতে পারে

পোকার আক্রমণ (ঝিরঝির পোকা, মাছি): ফলন নষ্ট করে

বাজারে দালালের দৌরাত্ম্য: কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়

সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থা দুর্বল: আধুনিক কোল্ডস্টোরেজ নেই

সম্ভাবনার দিগন্ত

এসবিকে ইউনিয়নে আম চাষ এখন শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের কৃষি উদ্যোগ নয়—এটি হয়ে উঠতে পারে একটি সম্প্রদায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক রূপান্তরের মাধ্যম। এর জন্য দরকার:

প্রক্রিয়াজাত শিল্প স্থাপন (প্যাকিং, জুস, শুকনো আম)

স্থানীয় কৃষি সমবায় গঠন

প্রযুক্তি-ভিত্তিক কৃষি পরামর্শ সেবা (মোবাইল অ্যাপ, হটলাইন)

আন্তর্জাতিক রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজীকরণ

উপসংহার

এসবিকে ইউনিয়নে আম বাগান চাষ একটি সম্ভাবনাময় খাত, যা কৃষকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি আয়, কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতার পথ তৈরি করছে। সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বিত সহযোগিতা থাকলে এই ইউনিয়নটি আগামী দিনে দেশের ফল উৎপাদন খাতে একটি অনুকরণীয় মডেল হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।