Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

**Pay Regular UP Holding Tax, Receive Smart Services** **Safety to Citizen Rights Registration of Birth and Death within 45 Days** **Help Ensure Child Rights by Registering Child Birth on Time** Mr. Md. Arifan Hasan Chowdhury , Chairman (Registrar) and Goutam Biswas, UP Administrative Officer (Assistant Registrar). ***To know about Universal Pension and to register visit www.upension.gov.bd


Village Court

গ্রাম আদালতএকটি পরিপূর্ণ পর্যালোচনা

ভূমিকা

বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ এবং এর অধিকাংশ জনগণ গ্রামে বসবাস করে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করতে এবং সহজে, দ্রুত ও কম খরচে বিচারসেবা প্রদান করতে "গ্রাম আদালত" একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এটি একটি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (Alternative Dispute Resolution – ADR) ব্যবস্থা যা আনুষ্ঠানিক আদালতের বাইরে স্থানীয়ভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ দেয়।


গ্রাম আদালতের সংজ্ঞা

গ্রাম আদালত হলো একটি প্রাথমিক ও স্থানীয় বিচার ব্যবস্থা যা ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় পরিচালিত হয় এবং যেখান থেকে ছোটখাটো দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি করা হয়। এটি মূলত জনগণের দোরগোড়ায় ন্যায়বিচার পৌঁছে দেওয়ার একটি পদ্ধতি।


আইনি ভিত্তি

গ্রাম আদালত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সরকার গ্রাম আদালত আইন২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩)” প্রণয়ন করে। এই আইনের আওতায় প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে একটি গ্রাম আদালত গঠন করা হয়।


গঠন  কাঠামো

একটি গ্রাম আদালত সাধারণত ৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়:

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান – যিনি আদালতের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

অভিযোগকারী পক্ষ থেকে  জন প্রতিনিধি (স্থানীয় নির্বাচিত সদস্য অথবা সম্মানিত ব্যক্তি)।

অভিযুক্ত পক্ষ থেকে  জন প্রতিনিধি (একইভাবে নির্বাচিত)।

এভাবে বিচার প্রক্রিয়ায় উভয় পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হয়।


মামলার ধরন

গ্রাম আদালতে শুধুমাত্র ছোটখাটো দেওয়ানি  ফৌজদারি মামলা গ্রহণযোগ্য। যেমন:

দেওয়ানি বিষয়:

জমি নিয়ে ছোটখাটো বিরোধ (মূল্যসীমা ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত)

ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত দাবি

প্রতিবেশীর সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ

ফৌজদারি বিষয়:

লঘু আঘাত

হুমকি প্রদান

মারামারি

গালিগালাজ

উল্লেখ্য: গুরুতর অপরাধ বা বড় দেওয়ানি মামলার এখতিয়ার গ্রাম আদালতের নেই। এসব ক্ষেত্রে সাধারণ আদালতে যেতে হয়।


কার্যপ্রণালী

অভিযোগ দাখিলের পর আদালত উভয় পক্ষকে নোটিশ পাঠায়।

শুনানি অনুষ্ঠিত হয় যেখানে দুই পক্ষের বক্তব্য শোনা হয়।

সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ যাচাইয়ের ভিত্তিতে রায় প্রদান করা হয়।

রায় কার্যকর করতে আদালত ইউপি সচিব/সদস্যের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করে।


গ্রাম আদালতের সুবিধা

সহজ প্রক্রিয়া: আইনি জটিলতা ছাড়াই ন্যায্য বিচার পাওয়া যায়।

দ্রুত নিষ্পত্তি: দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় না।

কম খরচ: মামলার জন্য উকিল বা আদালত ফি প্রয়োজন হয় না।

স্থানীয়ভাবে সমাধান: পারিবারিক/সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট না করে সমাধান সম্ভব।


চ্যালেঞ্জ  সীমাবদ্ধতা

অনেক ক্ষেত্রে বিচারকদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ থাকে।

সচেতনতার অভাবে অনেকেই গ্রাম আদালতের সুবিধা জানে না।

প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের অভাব বিচার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে।


উপসংহার

গ্রাম আদালত একটি যুগোপযোগী ব্যবস্থা যা স্থানীয়ভাবে জনগণকে সুলভে এবং দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করতে সক্ষম। এটি শুধু বিচার ব্যবস্থাকে সহজ করে না, বরং সামাজিক স্থিতিশীলতা ও গ্রামীণ শান্তি রক্ষা করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে এটি কার্যকর করতে হলে আরও সচেতনতা, প্রশিক্ষণ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।